মেয়েদের ওজন কমানোর ঘরোয়া উপায়

অনেকেই অতিরিক্ত ওজন নিয়ে চিন্তিত। বন্ধুদের সামনে মজার ছলে অনেকেই অপমান করে। ওজন কমানোর জন্য যারা ঘরোয়া উপায় খুঁজছেন তাদের জন্যই আজকের আর্টিকেল।
মেয়েদের ওজন কমানোর ঘরোয়া উপায়
আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমরা কয়েকটি অভ্যাস নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি যে অভ্যাসগুলো ওজন কমানোর জন্য কার্যকরী ভূমিকা হিসেবে কাজ করে এবং প্রতিটা অভ্যাসে বৈজ্ঞানিক প্রমাণ দ্বারা পরীক্ষিত তাই আপনি যদি ঘরোয়া উপায়ে ওজন কমাতে চান তাহলে আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার অনুরোধ রইলো।

পেজ সূচিপত্রঃ

ঘরোয়া উপায়ে ওজন কমানো

ঘরোয়া উপায়ে কিভাবে ওজন কমানো যায় সেই বিষয়ে অনেকেই অনেক রকম পরামর্শ দিতে পারে। আজকে কোন উপকার পরামর্শ না দিয়ে সরাসরি বৈজ্ঞানিকভাবে পরীক্ষিত ও কার্যকরী কয়েকটি অভ্যাসের কথা বলব যে অভ্যাসগুলো আমরা যদি নিজেদের জীবনের সাথে মিলিয়ে নিতে পারি অর্থাৎ যে অভ্যাসগুলো গড়ে তুলতে পারলে আমাদের শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এবং সে অভ্যাসের কারণে আমাদের ওজন কমাতে সহায়ক হিসেবে ভূমিকা পালন করবে।
আজকের আর্টিকেলে দেখানো অভ্যাসগুলোর কোন অভ্যাসই আপনার শরীরকে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে না। অর্থাৎ এই অভ্যাসগুলো গড়ে তোলার মধ্যে কোন প্রকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। তাই নির্দ্বিধায় এ অভ্যাসগুলো গড়ে তুলে ঘরোয়া উপায়ে ওজন কমাতে পারেন।

আধা লিটার পানি খাওয়া

প্রতিদিন সকালবেলা খাওয়ার আগে আধা লিটার পানি খেয়ে নিতে পারেন। সেটাতে একটু পেট ভরা লাগবে, তখন কম নাস্তা খেলেও মনে হবে পেট ভরে গেছে আর পানিতে যেহেতু কোন ক্যালরি নেই তাই ওজন ও বাড়বে না। তাই নাস্তা খাওয়ার আগে কোন দ্বিধা দ্বন্দ্ব ছাড়াই আধা লিটার পানি খেয়ে নিতে পারবেন তবে দিনের অন্যান্য বেলাতেও এই টেকনিকটা কাজে লাগাতে পারেন।
অনেকেই মনে করেন খাওয়ার আগে পানি খেলে হজমের সমস্যা হয় তবে এটার কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই তাই দ্বিধাদ্বন্দ ছাড়াই খাওয়ার আগে আধা লিটার পানি খেয়ে নিতে পারেন।

দিনের নাস্তা ঠিক করে রাখা

আমাদের যখন ক্ষুধা লাগে তখন আমরা বিভিন্ন অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে ফেলি যেমন পুরি সিঙ্গারা জিলাপি ইত্যাদি। আমরা সবাই জানি এ সকল খাবার অসুস্থ কর বা এ সকল খাবারে কোন পুষ্টিকর উপাদান থাকে না তারপরেও আমরা ক্ষুধা লাগলে এগুলো খাবার খেতে কোন সমস্যা মনে করি না। এ সকল খাবার থেকে লোভ সামলানো টাও কঠিন হয়ে পড়ে। 

এই ধরনের খাবার থেকে বাঁচতে আমরা প্রতিদিন সকালবেলাতেই ঠিক করে রাখতে পারি আমরা সারাদিন ক্ষুদা লাগলে কোন কোন খাবার খাব। কোন জায়গায় গেলে যে কোন ধরনের ফল সাথে নিয়ে যেতে পারেন অথবা বাদাম যেকোনো ধরনের স্বাস্থ্যকর খাবার। এ ধরনের খাবার সাথে থাকলে অস্বাস্থ্যকর খাবার এর অভ্যাস ঠেকানো টা সহজ হবে।

সকালে হেটে হেটে কাজে যাওয়া

প্রতিদিন সকালে আমরা স্কুলে যাই অথবা কাজের উদ্দেশ্যে অফিসে যাই অনেকেই নিজস্ব গাড়িতে অথবা পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করি কিন্তু আমরা যদি সকালবেলা কাজে যাওয়ার জন্য হাতে একটু বেশি সময় নিয়ে হেঁটে হেঁটে কাজে যেতে পারি তাহলে সকালের একপ্রকার ব্যায়াম হয়ে যায়। চাইলে কিছুদূর পর্যন্ত হেঁটে গিয়ে গাড়িতে চড়তে পারেন অথবা অফিস পৌঁছানোর আগেই গাড়ি থেকে নেমে তারপর হেঁটে বাকিটা পথ যেতে পারেন এভাবে ধীরে ধীরে অভ্যাস করলেই সম্ভব হবে।

সকালের এই হেঁটে কাজে যাওয়ার অভ্যাসটা তৈরি হয়ে গেলে শুধু ওজন কমানোর ক্ষেত্রে না বরং সে ওজন ধরে রাখতেও সহায়ক ভূমিকা হিসাবে কাজ করে। তাই ঘরোয়া উপায়ে ওজন কমানোর জন্য সকালবেলা হেঁটে কাজে যাওয়ার অভ্যাসটি আজই তৈরি করুন

চিনি ছাড়া চা কফি খাওয়া

আমাদের মধ্যে অনেকেরই নিয়মিত চা কপি খাবার অভ্যাস রয়েছে। আপনারা তিন নিয়মিত চাকরি খেতে চান তাহলে চিনি ছাড়া খেতে পারেন কারণ তিনি স্বাস্থ্যের জন্য কোন উপকার বয়ে নিয়ে আসে না বরং ওজন বৃদ্ধি করার পাশাপাশি বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করে।
আবার অনেকের চায়ের সাথে বিস্কুট খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে বিস্কুট মিষ্টি না হইলেও এতে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে তাই বিস্কুট এড়িয়ে চলা উচিত এর পাশাপাশি চিনি দিয়ে তৈরি বা চিনি ব্যবহৃত হয়েছে এমন খাবার এরে চলা বা কম খাওয়া ওজন কমাতে সাহায্য করে।

সকালে ওজন মাপা

একটা গবেষণায় দেখা গেছে যারা প্রতিদিন সকালে ওজন মাপে তারা সহজে ওজন কমাতে পারে। প্রতিদিন সকালে ওজন মাপতে তো ওজন কমার কোন সম্ভাবনার নেই কিন্তু এই ওজন মাপার কারণে আপনি প্রতিদিন স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারবেন ওজন বৃদ্ধি হচ্ছে কিনা অথবা ওজন কমছে কিনা সেটি প্রতিদিন বুঝতে পারবেন এবং সেই অনুযায়ী আপনার কোথায় কমতে রয়েছে তা খুঁজে বের করে সমাধান করতে পারবেন। তাই প্রতিদিন খালি পেটে সম্ভব হলে একই পোশাক পরে সকাল বেলা ওজন মাপার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন।

সকাল সকাল ব্যায়াম করা

ওজন কমাইতে চাইলে ব্যায়াম করতে হবে এটা আমাদের সকলেরই জানা। তবে প্রতিদিনের বিভিন্ন কাজের মধ্যে আমাদের ব্যায়াম করার সময় থাকে না বা ব্যায়াম করার জন্য এক্সট্রা সময় বের করা কঠিন হয়ে পড়ে তাই প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠেই হালকা ব্যায়াম করে নেয়া উচিত। যেকোনো ধরনের ব্যায়াম হতে পারে, আপনার যেই ব্যায়াম করতে বেশি ভালো লাগে সেই ব্যায়াম প্রতিদিন নিয়ম করে করতে পারেন তবে সকালবেলাতেই আপনি ব্যায়াম করে নেবেন এতে পরবর্তীতে কাজের যতই চাপ হোক না কেন আপনার ব্যায়াম হয়ে যাচ্ছে। আবার ফ্রি সময় পেলে বিকালে আরো একবার ব্যায়াম করে নিতে পারেন এটি বনাস হিসেবে কাজ করবে।

পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো

পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম সরাসরি ওজন কমাতে কোন সাহায্য না করলেও এটি বিভিন্নভাবে ওজন কমানোর ওপর প্রভাব ফেলে যেমন কম ঘুম হইলে শরীরে ক্লান্তি বাড়ে, রাত্রিবেলা জেগে থাকলে খাওয়ার চাহিদা বৃদ্ধি হতে পারে, কম ঘুমে ক্লান্তি থেকে ব্যায়াম মিস হয়ে যেতে পারে, জেগে থাকার ফলে স্বাস্থ্যকর খাবারের পরিবর্তে অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার ফলে ওজন বৃদ্ধি হতে পারে। তাই প্রতিদিন কমপক্ষে সাত থেকে আট ঘন্টা ঘুমিয়ে নেবেন। সকাল বেলা ঘুম থেকে ওঠার পর একটু চিন্তা করবেন আপনি কত ঘন্টা ঘুমালেন যদি সাত থেকে আট ঘণ্টার কম ঘুম হয় তাহলে ঘুমের রুটিন পরিবর্তন করুন এবং পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন।

 দিনের জন্য একটা একশন পয়েন্ট ঠিক করা

ওজন কমানোর জন্য প্রতিদিন নির্দিষ্ট একটি অ্যাকশন পয়েন্ট ঠিক করে রাখলে ওজন কমাতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা হিসেবে কাজ করে। প্রতিদিন এমন একটি অ্যাকশন পয়েন্ট ঠিক করা যেটি করলে ওজন বৃদ্ধি পায় না বা ওজন কমাতে সাহায্য করে। 
অ্যাকশন পয়েন্ট হিসেবে আপনি আজকে কোন প্রকার ও স্বাস্থ্যকর খাবার খাব না, আজকে বন্ধুদের মাঝে বসে আড্ডা না দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আড্ডা দেবো, আজকে কোন প্রকার চিনে যুক্ত খাবার খাব না ইত্যাদি একশন পয়েন্ট ঠিক করতে পারেন।
প্রতিদিন একই অ্যাকশন পয়েন্ট ঠিক না করে সপ্তাহে সাত দিন সাত রকম অ্যাকশন পয়েন্ট ঠিক করে সপ্তাহ শেষে কোন অ্যাকশন পয়েন্ট সবচেয়ে বেশি কার্যকরী ভূমিকা রাখছে সেটি খুঁজে বের করুন এবং পরবর্তী থেকে সেই অ্যাকশন পয়েন্টটি মেনে চলার চেষ্টা করুন।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হতে পারবেন। আজকের আর্ট ফিল্মের মাধ্যমে আমরা ঘরোয়া কয়েকটি অভ্যাস দেখানোর চেষ্টা করেছি যে অভ্যাসগুলো আপনি গড়ে তুলতে পারলে ঘরোয়া উপায়ে ওজন কমাতে পারবেন। এবং স্বাস্থ্যকর উপায় আপনার শরীর গঠন করতে পারবেন এই পদ্ধতিতে শুধুমাত্র মেয়েদের ওজন কমানো যাবে এমনটা কিন্তু নয় চাইলে এই পদ্ধতিতে ছেলেরাও ওজন কমাতে পারেন।

সবশেষে পাঠকদের উদ্দেশ্যে একটাই কথা বলি প্রিয় পাঠকবৃন্দ শেষ পাতার আজকের এই আর্টিকেলটি এখানেই শেষ করছি। আর্টিকেলের মধ্যে কোন প্রকার ভুল ভ্রান্তি হয়ে থাকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। একই সাথে কমেন্টে ভুলগুলো ধরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ রইলো।
পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কোনো কমেন্ট করা হয় নি
কমেন্ট করতে ক্লিক করুন

শেষ পাতার কমেন্ট পলিসি মেনে কমেন্ট করুন।

comment url