আলুর চিপস বানানোর পদ্ধতি
বাচ্চা থেকে বড় সকলেরই পছন্দের একটি খাবার পটেটো চিপস। আমরা সাধারণত দোকান থেকে
পটেটো চিপস কিনে খায়। তবে আপনার যদি আলুর চিপস বানানোর পদ্ধতি জানা থাকে তাহলে
২০মিনিটেই তৈরি করতে পারবেন দোকানের চেয়েও সুস্বাদু পটেটো চিপস।
আজকে আমরা শিখব বাসাতে থাকা আলু দিয়ে এবং কিছু মসলা দিয়ে কিভাবে বাজারের চেয়েও
সুস্বাদু আলোর চিপস তৈরি করা যায়।
পেজ সূচিপত্রঃ
আলুর চিপস বানানোর রেসিপি
বাজার থেকে পটেটো চিপস কিনতে গেলে আমাদের কাছ থেকে যে পরিমাণ দাম নেয় সেই
অনুযায়ী আমরা চিপস পাই না। সেই ছোটবেলা থেকে পটেটো চিপসের দাম এখনো
পর্যন্ত বাড়তে দেখলাম না। কিন্তু আপনার মনে কি কখনো প্রশ্ন হয়েছে চিপসের
দাম বাড়ে না কেন? আমি বলছি চিপসের দাম না বাড়ার মূল কারণ হলো প্রতিনিয়ত
চিপসের কোম্পানিগুলো তাদের চিপসের প্যাকেটে চিপসের পরিমাণ কমিয়ে আসছে তাই
চিপসের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হয় না।
আরো পড়ুনঃ সজনে পাতার উপকারিতা
এছাড়াও বাজার থেকে কেনা পটেটো চিপস সব সময় স্বাস্থ্যকর হয় না। এ কারণে
ডাক্তাররা বাইরের খাবার না খাওয়ার পরামর্শ দেয়। তাই আপনি যদি আলুর চিপস
বানানোর পদ্ধতি জানেন তাহলে বাইরে থাকা কিছু উপকরণ দিয়েই মাত্র ২০ মিনিট
সময় নিয়ে তৈরি করে নিতে পারবেন দোকানের মত পটেটো চিপস। তবে মনে রাখবেন
আজকের দেখানো প্রতিটি পদ্ধতি খুব মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং সেই অনুযায়ী
পটেটো চিপস তৈরি করুন।
যা যা প্রয়োজন হবে
আজকে যেই পদ্ধতি দেখাইতে চলেছি সেই পদ্ধতিতে আলুর চিপস বানাইতে হইলে বেশি
কিছুর প্রয়োজন হবে না বাসায় থাকা কিছু উপকরণ দিয়েই তৈরি করতে পারবেন।
৫টি আলু দিয়ে আলুর চিপস বানানোর জন্য যা যা উপকরণ লাগবে সেগুলো নিচে
দেওয়া হল:
- ৫টি বড় সাইজের আলু
- ২চা চামচ খাবার লবণ
- ৩-৪চা চামচ বিট লবণ
- ৩-৪চা চামচ মরিচের গুঁড়া
- ১/২চিমটি টেস্টিং সল্ট
- ১চা চামচ চিনি
- ভাজার জন্য তৈল
টেস্টি মসলা তৈরি করুন
আলুর চিপস বানানোর আগেই আমরা চিপসের টেস্ট বৃদ্ধির জন্য টেস্টি মসলা তৈরি
করে নেব। আলুর চিপস কে টেস্টি করার জন্য ২চা চামচ খাবার লবণ, ৩-৪ চা
চামচ বিট লবণ, ২চিমটি টেস্টিং সল্ট, ১ চা চামচ চিনি এবং ৩-৪চা চামচ মরিচের
গুঁড়া। (ঝাল বাড়ানোর জন্য মরিচের গুঁড়ার পরিমাণ বাড়ানো যেতে পারে)
উপকরণ গুলো ব্লেন্ডার মেশিনের মাধ্যমে ব্লেন্ড করে নেবেন। যতক্ষণ পর্যন্ত
পুরোপুরি পাওয়ারের মতো না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত গুড়া করবেন। পাওয়ারের মতো
হয়ে গেলে পরিষ্কার পাত্রে রেখে পরবর্তীতে স্টেপ ফলো করুন
আলু কাটার নিয়ম
আলু কাটার আগে অবশ্যই আমরা ভালোভাবে আলুগুলো পরিষ্কার পানিতে ধরে নেব।
তারপর চাকু অথবা যে কোন ধারালো কিছু দিয়ে আলুর খোসা ছাড়িয়ে নেব। এবার
কাটার পালা আলুগুলোকে স্লাইস ট্রৈ এর সাহায্যে পাতলা পাতলা করে স্লাইস করে
কেটে নিতে হবে। আপনার বাসায় স্লাইস ট্রৈ না থাকলে ছুটি বা বঁটি দিয়েও
কেটে নিতে পারেন। আর হ্যাঁ আলু গুলো কাঁটার সঙ্গে সঙ্গে পানিতে ডুবিয়ে
রাখবেন। পানিতে ডুবিয়ে না রাখলে কালো হয়ে যেতে পারে।
ধুয়ে নিন এবং শুকিয়ে নিন
আলু কাটার পর ফ্লাইস গুলো ভালোভাবে কয়েকবার ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে নিতে হবে।
যে পানি দিয়ে আপনি আলুগুলোকে পরিষ্কার করবেন সে পানিতে সাদা ভাব যতক্ষণ
থাকবে ততক্ষণ ধুতে থাকবেন। ধোয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন কারণ
ভালোভাবে না ধাওয়া হইলে আলুর চিপস ভাজার পর বেশিক্ষণ মুচমুচে থাকে না নরম
হয়ে যায়। তাই ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
আরো পড়ুনঃ কলা খাওয়ার উপকারিতা কি
ধোয়া হয়ে গেলে পাতলা তাওয়ালে অথবা কিচেন টিস্যুতে রেখে পানি ভালোভাবে
শুকিয়ে নিতে হবে। তাড়াতাড়ি শুকানোর জন্য অনেকে রোদে দিয়ে থাকে এতে করে
আলোর চিপসের গুণগত মান নষ্ট হবে এবং দোকানের মত হবে না তাই কোনোভাবেই আলোর
চিপস কেটে ধোয়ার পর শুকানোর জন্য রোদে দেওয়া যাবে না।
গরম তৈলে আলু ভেজে নিন
কেটে রাখা আলুর চিপসের পানি ভালোভাবে শুকিয়ে গেলে তবে তেল দিয়ে ভাঁজতে
হবে। একটি ফ্রাই পেন অথবা কড়াইতে তেল গরম করুন। তেল ভালোভাবে গরম হয়ে
গেলে চুলা মিডিয়াম আছে রেখে কেটে রাখা আলুর চিপস তেলের ভেতর ছেড়ে দিন।
আলুর চিপস ততক্ষণ পর্যন্ত ভাজুন যতক্ষণ পর্যন্ত বাবলস উঠা বন্ধ না হয়।
আলুর চিপসের কালার বাদামি রঙ ধারন করলে বুঝতে পারবেন আলোর চিপস ভাজা
সম্পূর্ণ হয়েছে। আলুর চিপস ভাজা কমপ্লিট হয়ে গেলে ছাঁকনির সাহায্যে তুলে
নিন এবং ভালোভাবে তেল ঝরিয়েছেন নিন।
পরিবেশন করুন
তেলেভাজা আলুর চিপস সাথে সাথে পরিবেশন করবেন না। কিছুটা ঠান্ডা হওয়ার জন্য
অপেক্ষা করুন ঠান্ডা হয়ে গেলে এবং চিপসের গায়ে তেল না থাকলে সবগুলো আলুর
চিপস একটি পাত্রে রাখুন এবং আগে বানিয়ে রাখা টেস্টি মসলা ছিটিয়ে দিন।
এবার ভালোভাবে সবগুলো চিপসে মসলা পৌঁছে যায় এমন ভাবে পাত্রটি ঝাঁকিয়ে
মসলা মিশিয়ে নিতে হবে।
ব্যাস হয়ে গেল আলু দিয়ে তৈরি করা চিপস। এবার পরিবেশন করুন এবং বাজার থেকে
কেনা আলোর চিপসের সাথে বাড়িতে বানানো আলোর চিপসের তুলনা করুন। বাড়িতে
বানানো আলুর চিপসের যেহেতু কোন প্রকার ক্ষতিকারক উপাদান ব্যবহার করা হয়নি
তাই অবশ্যই এটি স্বাস্থ্যসম্মত এবং শিশুদের জন্য উপযুক্ত।
শেষ কথা
আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা বাসাতে থাকা আলু এবং কিছু উপাদানের মাধ্যমে
কিভাবে আলুর চিপস বানানো যায় সেটি দেখানোর চেষ্টা করেছি। আশা করি আজকের
দেখানো পদ্ধতিতে আলোর চিপস বানিয়ে বাসার সবাই খেতে পারবেন পাশাপাশি
অতিথিকেও পরিবেশন করতে পারবেন। আর হ্যাঁ এই চিপস বানানোর পর যে কোন বয়াম
বা জারে রেখে দিলে ১-২মাস পর্যন্ত মুচমুচে থাকে।
আর পরিশেষে একটাই কথা বলি আর্টকেলের মধ্যে যদি কোন ভুল-ভ্রান্তি হয়ে থাকে
তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন। আর এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে উপকৃত হয়ে থাকলে
পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন।
শেষ পাতার কমেন্ট পলিসি মেনে কমেন্ট করুন।
comment url